প্রতিদিন ২৪ ডেস্ক
একটি স্থিতিশীল পুঁজিবাজারের
অপেক্ষার প্রহর কাটতে শুরু করেছে বলে মনে করছেন বিনিয়োগকারীরা। গত প্রায় এক মাস
দেশের পুঁজিবাজারের গতিবিধি পর্যালোচনা করে সেই ধারণাই করছে সংশ্লিষ্ট অনেকেই। এই
ধারণা থেকে নতুন করে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে ব্যক্তিশ্রেণীর বিনিয়োগকারীরা।
গত সপ্তাহে নতুন গুজবে কিছুটা টালমাটাল হয়ে উঠেছিল
বাজার পরিস্থিতি। তবে আগের মতো বিনিয়োগকারীরা গুজবে কান না দিয়ে প্রকৃত অবস্থা
বিবেচনায় নিয়ে বিনিয়োগ করায় লেনদেন ছাড়িয়েছে হাজার কোটি টাকা। চলতি বছরের মধ্যে
বৃহস্পতিবার লেনদেন হয়েছে সর্বোচ্চ।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পুঁজিবাজারের কালো মেঘ কাটতে শুরু করেছে।
প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের সক্রিয় ভূমিকায় প্রতিদিনই লেনদেন বাড়ছে। এর ফলে
সক্রিয় হচ্ছে ব্যক্তিশ্রেণীর বিনিয়োগকারীরাও।
গত সপ্তাহে পরিচালকদের ন্যূনতম শেয়ার ধারণসংক্রান্ত
সিকিউরিটি অ্যান্ড কমিশন এক্সচেঞ্জ (এসইসি) এর জারি করা প্রজ্ঞাপনের বিষয়ে
হাইকোর্টে রিট করে এক পরিচালক। এই রিটের পরিপ্রেক্ষিতে কোর্ট চার সপ্তাহের রুল
জারি করে। এই খবরে সোমবার সূচক ও লেনদেন কমে যায়। তবে পরে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, “হাইকোর্ট এই প্রজ্ঞাপনের বিষয়ে
কোনো স্থগিতাদেশ দেয়নি।” এই খবরে আবার
প্রাণ ফিরে পায় বাজার।
বিশ্লেষকরা বলছেন, বাজারে এখন তেজি ভাব বিরাজ করছে। এ অবস্থায় বাজারে
বিক্রেতার চেয়ে ক্রেতা বেশি। অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে, এই তেজি ভাব আরো কিছু দিন অব্যাহত থাকবে। তালিকাভুক্ত
কোম্পানির উদ্যোক্তা-পরিচালকদের ন্যূনতম শেয়ার ধারণের বিষয়ে উচ্চ আদালতে রিট আবেদন
দাখিলের পর সাধারণ ব্যক্তিশ্রেণীর বিনিয়োগকারীদের মধ্যে সাময়িকভাবে যে শঙ্কা তৈরি
হয়েছিল, তা পুরোপুরি কেটে গেছে বলেই
মনে হচ্ছে।
অ্যাডামস সিকিউরিটিজের সিইও হাবিবুর রহমান বলেন,
“বাজারের তেজি ভাবের সুযোগে কম
বা ছোট মূলধনের কোম্পানিগুলোর শেয়ারের দামই বেশি বাড়ছে। কারণ, বাজার বাড়তে থাকলে
বিনিয়োগকারীদের মধ্যেও দ্রুত লাভ করার প্রবণতা বাড়তে থাকে। এ কারণে নানাজনের মুখ
থেকে শুনে তারা কম মূলধনের কোম্পানিতে বিনিয়োগে অতিমাত্রায় ঝুঁকে পড়েন। গত কিছু
দিনে ছোট মূলধনের অনেক কোম্পানির শেয়ারের দাম ভালোই বেড়েছে। তাই এখন এসব কোম্পানির
শেয়ার কেনার ক্ষেত্রে সাবধানতা
অবলম্বনের সময় এসেছে। তবে পুঁজিবাজারে সোনালি সময় ফিরে আশতে শুরু করেছে।”
অ্যাডামস সিকিউরিটিজে বিও হিসাবধারী আবুল হাসান বলেন, “আমরা এখন আর সেই ভয়াবহ ধসের
কথা মনে রাখতে চাই না। নতুন করে স্বপ্ন দেখছি একটি স্থিতিশীল পুঁজিবাজারের।
ডিএসইতে নতুন নেতৃত্ব আশার পর থেকে যেভাবে বাজার পরিস্থিতি ঘুরে দাঁড়িয়েছে তাতে
মনে হচ্ছে এত দিন পরে সত্যিকার অর্থে স্থিতিশীলতার দিকে যাচ্ছে বাজার।”
এদিকে, গত সপ্তাহে দেশের
প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেন বেড়েছে ১৬ দশমিক ১৯ শতাংশ।
লেনদেন হওয়া মোট ২৭১টি ইস্যুর মধ্যে দর বেড়েছে ১৬৬টির, কমেছে ৯২টির ও অপরিবর্তিত
রয়েছে ১৩টির। সাধারণ মূল্যসূচক ২৪৪ পয়েন্ট বেড়ে পাঁচ হাজার ৩৪৩ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
বাজার মূলধন বেড়েছে চার শতাংশ।
No comments:
Post a Comment