প্রতিদিন ২৪ ডেস্ক
9 April: চলতি
অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে (জুলাই-২১ মার্চ) ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে ১৬ হাজার ৪০০ কোটি
টাকা ঋণ নিয়েছে সরকার, যা গত
অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে চারগুণেরও বেশি। গত বছরের একই সময়ে ৪ হাজার ২৩ কোটি টাকা
ঋণ নিয়েছিল সরকার। ২০১১-১২ অর্থবছরের বাজেটে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে সরকারের ঋণ
গ্রহণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ১৮ হাজার ৯৫৭ কোটি টাকা। অর্থবছরের শুরু থেকেই ব্যাংক
ব্যবস্থা থেকে সরকারের ঋণ গ্রহণের পরিমাণ বাড়তে থাকে।
বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়া
গত বছরের ১ ডিসেম্বর এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, এত
অল্পসময়ে সরকারের এত বিরাট অঙ্কের ঋণ নেওয়া নজিরবিহীন। এর ফলে বেসরকারি খাতে
সৃষ্টি হয়েছে ‘ঋণদুর্ভিক্ষ’। ৫ ডিসেম্বর ব্যাংক থেকে সরকারের ঋণ গ্রহণের
পরিমাণ ২২ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যায়। তবে ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে লাইসেন্স
নবায়ন ফি বাবদ মোবাইল অপারেটরদের কাছ থেকে ৪ হাজার কোটি টাকা সরকারের হিসাবে যোগ
হয়। সে হিসাব থেকে ৪ হাজার কোটি টাকার কিছু বেশি ধার শোধ করায় ঋণের পরিমাণ ১৬
হাজার কোটি টাকায় নেমে আসে। এর পর থেকে ব্যাংক থেকে সরকারের ঋণের পরিমাণ সাড়ে ১৫
হাজার থেকে সাড়ে ১৬ হাজারের মধ্যে ওঠানামা করছে। অর্থমন্ত্রী গণমাধ্যমকে বলেছেন, ব্যাংক-বহির্ভূত উৎস থেকে ঋণপ্রাপ্তি কম হওয়ায় এবং
বিদেশী ঋণ ও অনুদানের প্রবাহ তুলনামূলকভাবে কমে যাওয়ায় ভর্তুকির অর্থ ছাড়সহ
অন্যান্য ব্যয় মেটাতে সরকার ব্যাংক উৎস থেকে ঋণ গ্রহণ করছে।
কেন্দ্রীয়
ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২১
মার্চ পর্যন্ত ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে সরকার ১৬ হাজার ৩৯৭ কোটি ১৩ হাজার টাকা ঋণ
নিয়েছে। এর মধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে নিয়েছে ৫ হাজার ৪৮২ কোটি ৬ লাখ টাকা। আর
তফসিলি ব্যাংকগুলো থেকে নিয়েছে ১০ হাজার ৯১৫ কোটি ৭ লাখ টাকা। গত অর্থবছরে সরকার
ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে মোট ২০ হাজার ৪০০ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছিল, যা ওই অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের লক্ষ্যমাত্রার
চেয়েও ২ হাজার কোটি টাকা বেশি ছিল। গত বাজেট পর্যালোচনায় দেখা যায়, অর্থবছরের (২০১০-১১) প্রথম নয় মাসে (জুলাই-মার্চ)
ব্যাংক থেকে সরকারের ঋণ গ্রহণের পরিমাণ কম থাকলেও বছরের শেষ দিকে এসে তা অনেক বেড়ে
যায়। সরকারের ব্যাংক ঋণ বাড়ার কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক
অর্থ উপদেষ্টা এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, ভাড়াভিত্তিক
বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর জন্য বাড়তি জ্বালানি তেল আমদানির জন্যই সরকারের খরচ বেড়ে
গেছে। ব্যাংক ঋণ বেড়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ এটি।
জ্বালানি
তেলের জন্য আমদানি ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় বাণিজ্য ঘাটতিও বাড়ছে। এর ফলে চাপ পড়ছে
বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে। ফলে ব্যাংকের দ্বারস্থ হতে হচ্ছে সরকারকে।
বৈদেশিক
ঋণ এসেছে কম : চলতি
অর্থবছরের জানুয়ারি পর্যন্ত বিদেশী ঋণসহায়তা হিসেবে ৬৫ কোটি ৮৯ লাখ ৭০ হাজার ডলার
পাওয়া গেছে, যা পুরো
অর্থবছরের প্রত্যাশার মাত্র ২৯ শতাংশ।
চলতি
অর্থবছরের বাজেটে সরকার আশা করছে, বিদেশী
উৎস থেকে মোট ১৮ হাজার ৬৮৫ কোটি টাকা ঋণ-সহায়তা পাওয়া যাবে। অর্থবছরের জানুয়ারি
পর্যন্ত বিভিন্ন ঋণদাতা সংস্থা ও দেশের কাছ থেকে আরো ৩৯৫ কোটি ৫০ লাখ ৪০ হাজার
ডলার ঋণ-সাহায্যের অঙ্গীকার পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ঋণ হিসেবে ২৯৯ কোটি ২৮ লাখ ৮০
হাজার ডলার এবং অনুদান হিসেবে ৯৬ কোটি ২২ লাখ ৯০ হাজার ডলার পাওয়া যাবে বলে আশা
করেছিল সরকার।
অগ্রগতি
নেই এডিপি বাস্তবায়নে : ঋণ
নিলেও উন্নয়ন ব্যয়ে ধীরগতি পরিলক্ষিত হচ্ছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম আট মাসে
(জুলাই-ফেব্রুয়ারি) বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) মাত্র ৩৮ শতাংশ বাস্তবায়িত
হয়েছে। এই সময়ে ১৭ হাজার ৫১৯ কোটি টাকা খরচ করতে পেরেছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও
বিভাগগুলো। এর মধ্যে স্থানীয় মুদ্রায় খরচ হয়েছে ৪৬ শতাংশ বা ১২ হাজার ৫৯৯ কোটি
টাকা। জুলাই-ফেব্রুয়ারিতে বিদেশী সহায়তার মাত্র ২৬ শতাংশ বা চার হাজার ৯২০ কোটি
টাকা খরচ করা সম্ভব হয়েছে। চলতি অর্থবছরে এক হাজার ৩৯টি প্রকল্পের বিপরীতে ৪৬
হাজার কোটি টাকার এডিপি হাতে নেওয়া হয়। এর মধ্যে স্থানীয় মুদ্রায় ২৭ হাজার ৩১৫
কোটি টাকা আর বিদেশী সহায়তা হিসেবে ১৮ হাজার ৬৮৫ কোটি টাকা রাখা হয়। চলতি অর্থবছরে
জুলাই-ডিসেম্বরে পাঁচটি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ তাদের বরাদ্দের ১০ শতাংশেরও কম অর্থ
খরচ করতে পেরেছে। চলতি অর্থবছরের শুরুতে সরকার ৪৬ হাজার ৫০০ কোটি টাকার উন্নয়ন
কর্মসূচি ঘোষণা করলেও পরে তা ৪০ হাজার ৫০০ কোটি টাকায় নামিয়ে আনা হয়েছে।
সুদাসল
পরিশোধ : চলতি
অর্থবছরের প্রথম ৬ মাসে সরকার যে পরিমাণ বিদেশী ঋণ ও সাহায্য পেয়েছে, তার অর্ধেকেরও বেশি খরচ হয়ে গেছে ঋণের সুদ-আসল
পরিশোধ করতেই। চলতি ২০১১-১২ অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বরে দেশে ৮০ কোটি ৭৪ লাখ ডলারের
ঋণ সহায়তা এসেছে। এর মধ্যে ঋণের সুদ-আসল পরিশোধে খরচ হয়েছে ৪১ কোটি ৫৩
লাখ মার্কিন ডলার। ফলে গত ৬ মাসে সরকারের হাতে ছিল মাত্র ৩৯ কোটি ২০ লাখ ডলার।
ব্যাংকের
সক্ষমতা হ্রাস : সরকারকে
ঋণের জোগান দিতে গিয়ে ব্যাংকের বিনিয়োগ-সক্ষমতা কমে যাচ্ছে। দেশের ব্যাংকগুলো যে
পরিমাণ আমানত সংগ্রহ করছে তার অর্ধেকের বেশিই চলে যাচ্ছে সরকারের ঋণ খাতে। আবার
আমানত সংগ্রহ করতে যে পরিমাণ ব্যয় হচ্ছে সরকারের কাছ থেকে তা পাচ্ছে না। এতে যে
পরিমাণ ক্ষতি হচ্ছে তার একটি অংশ সাধারণ গ্রাহকের পকেট থেকে সার্ভিস চার্জের নামে
তুলে নিচ্ছে ব্যাংক। এতে ব্যাংকের একদিকে তহবিল ব্যবস্থাপনা ব্যয় বাড়ছে, অপরদিকে বেসরকারি খাতে কাঙ্ক্ষিত হারে ঋণ দিতে
পারছে না। বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ কমে যাওয়ায় বর্ধিত হারে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হচ্ছে
না, বাড়ছে
বেকারত্বের হার। সরকারের ঋণের জোগান দেয় এমন ব্যাংকগুলোর শীর্ষ নির্বাহীদের কয়েকজন
নাম না প্রকাশ করার শর্তে জানিয়েছেন, তাদের
পাঁচ বছর, ১০ বছর, ১৫ বছর ও ২০ বছর মেয়াদে সরকারকে ঋণ দিতে হচ্ছে। এর
বিপরীতে বন্ড নামের কাগুজে মুদ্রা ধরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তাদের অর্থ সরকারের কাছে
দীর্ঘ মেয়াদে আটকে যাচ্ছে। এদিকে সরকারের ঋণের বিপরীতে জারি করা বন্ডগুলো লেনদেনের
জন্য সেকেন্ডারি বন্ড মার্কেট গঠন করা হয়েছিল। কিন্তু সেকেন্ডারি বন্ড মার্কেট
চাঙ্গা না হওয়ায় বন্ডগুলো বিনিময় করা যাচ্ছে না। এর ফলে সরকারের ঋণের জোগানদাতা
ব্যাংকগুলোতে সংকট লেগেই থাকছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে ব্যাংকগুলোর বিধিবদ্ধ তরল
সম্পদ (এসএলআর) সংরক্ষণ করার পরও প্রতিটি ব্যাংকের হাতে দেড় থেকে দুই হাজার কোটি
টাকার বন্ড অতিরিক্ত রয়েছে। শুধু চুক্তির মারপ্যাচে সরকারের বাধ্যতামূলক ঋণের
জোগানদাতা ১২টি ব্যাংকের হাতে এসএলআর সংরক্ষণ করার পর অতিরিক্ত বন্ড রয়েছে ১৮
হাজার কোটি টাকা।
ভুক্তভোগী
ব্যাংকগুলোর মতে, সরকারি
ট্রেজারি বন্ডে সুদ পাওয়া যায় সর্বোচ্চ পৌনে ১০ শতাংশ। বেশিরভাগ অংশেরই পাওয়া
যাচ্ছে ৬ থেকে ৭ শতাংশের মধ্যে। কিন্তু তারা আমানত সংগ্রহ করছে ১৪ শতাংশ হারে; যদিও ব্যাংকগুলো সাড়ে ১২ শতাংশে আমানত নেওয়ার
সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিন্তু তহবিল সংকট মেটাতে তারা উচ্চ সুদে আমানত নিচ্ছে। আবার
গড়ে ২০ শতাংশ হারে কলমানি মার্কেট থেকে ধার নিচ্ছে। এতেও সংকট মেটাতে না পেরে
বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে হাত পাতছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ব্যাংকগুলো গড়ে ৮ থেকে
১০ হাজার কোটি টাকা ধার নিচ্ছে। এতে সুদব্যয় আরো বেড়ে যাচ্ছে। এ উচ্চ সুদের
আমানতের অর্থে সরকারের ঋণ দেওয়ায় তাদের পরিচালন ব্যয় বেড়েই চলেছে। পাশাপাশি
বেসরকারি খাতেও তারা বিনিয়োগ করতে পারছে না। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ পরিসংখ্যান
মতে, জুলাই-জানুয়ারি
সাত মাসে বেসরকারি খাতে ঋণপ্রবাহের প্রবৃদ্ধি হয়েছে মাত্র ১০ শতাংশ, যেখানে আগের বছরের একই সময়ে ছিল সাড়ে ১৬ শতাংশ।
এমনি
পরিস্থিতিতে ব্যাংকগুলোর তহবিল সংকট মেটাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে বিভিন্ন উদ্যোগ
নিচ্ছে। ব্যাংকগুলোর হাতে ধরিয়ে দেওয়া সরকারি বন্ডগুলোর হাতবদল করতে কয়েক দফা
নীতিমালা শিথিল করা হয়েছে। এতেও তেমন সাড়া মিলছে না। ব্যাংকিং খাত থেকে সরকারের
বেপরোয়া ঋণ গ্রহণ কমছে না। চলতি ২০১২ সালেও সরকার বাংলাদেশ ব্যাংকের কোনো মতামত
ছাড়াই ব্যাংকিং খাত থেকে প্রায় ১৬ হাজার ১০ কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার পরিকল্পনা করেছে।
মাঝখানে কিছুদিন কমলেও সম্প্রতি সরকারকে আবারো বেশিমাত্রায় ব্যাংক ঋণ নিতে হচ্ছে।
অর্থনীতিবিদরা
বলছেন, সরকারের
ব্যাংক ঋণনির্ভরতা কমানোর জন্য বৈদেশিক বিনিয়োগ ও সহায়তাপ্রাপ্তির ওপর জোর দেওয়া
দরকার। এ হার বাড়তে থাকলে ব্যাংকিং ব্যবস্থার সাধারণ কার্যক্রম চালাতে সমস্যা দেখা
দিতে পারে। তারা আরো বলেন, ব্যাংক
ব্যবস্থা থেকে সরকার অতিমাত্রায় ঋণ নিলে বেসরকারি খাতে ঋণপ্রাপ্তিতে প্রতিবন্ধকতা
সৃষ্টি হয়। ব্যাংক কর্মকর্তারা বলেন, দেশের
অর্থনীতির এই পর্যায়ে কোনো অবস্থাতেই ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে বেশি ঋণ গ্রহণ সরকারের
জন্য ভালো নয়। কেননা এভাবে ঋণ নিতে থাকলে মূল্যস্ফীতি আরো বাড়বে। একই সঙ্গে
সরকারের ঋণ জোগান দিতে গিয়ে ব্যাংকগুলো বেসরকারি খাতে ঋণ দিতে পারবে না। এতে
উৎপাদন বাধাগ্রস্ত হবে। তিনটি কারণে সরকার ব্যাংক ঋণ বাড়াতে বাধ্য হচ্ছে। যার
মধ্যে, সঞ্চয়পত্রে
বিনিয়োগ মুখথুবড়েপড়া, বৈদেশিক
সহায়তা কমে যাওয়া, প্রতিশ্রুত
ঋণ না পাওয়া। বিশেষজ্ঞদের মতে, ব্যাংকিং
খাতে সরকার আরো ঋণ বাড়ালে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে স্বাভাবিকভাবেই সুদের হার বেড়ে
যাবে। যা প্রাইভেট সেক্টরকে ক্ষতিগ্রস্ত করার সঙ্গে সঙ্গে মূল্যস্ফীতিকেও উসকে
দিবে।
বিদেশী
ঋণ : বিদেশী
ঋণ পেতে মরিয়া হয়ে উঠেছে সরকার। কারণ বিদ্যমান অর্থ সংকট নিয়ে উদ্বিগ্ন সরকার।
পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিদেশী ঋণ ছাড়া সরকারের কোনো বিকল্প নেই। ইতোমধ্যে চলতি
অর্থবছরের প্রথম ৬ মাসে সরকার যে পরিমাণ বৈদেশিক ঋণ পেয়েছে, তার অর্ধেকেরও বেশি খরচ হয়ে গেছে ঋণের সুদ-আসল
পরিশোধ করতেই। এজন্য বেশি সুদে বিদেশ থেকে বিকল্প পন্থায় ঋণ বা সার্বভৌম ঋণ নেওয়ার
পরিকল্পনা করা হচ্ছে। পাশাপাশি দাতা সংস্থা আইএমএফ থেকেও কঠিন শর্তে ঋণ নিতে
চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।
দেশের
বিদ্যমান অর্থ সংকট মোকাবিলায় সরকার একদিকে যেমন ব্যাংকিং খাত থেকে ঋণ নেওয়া
অব্যাহত রেখেছে, অন্যদিকে
বিদেশ থেকে সার্বভৌম ঋণেরও উদ্যোগ নিচ্ছে। ইতিপূর্বে বাংলাদেশ এ ধরনের কোনো ঋণ
নেয়নি। কিন্তু অর্থের নাজুক পরিস্থিতিতে সরকারের সামনে অর্থ যোগানের বিকল্প কম।
কিন্তু সরকারের এ উদ্যোগকে দেশের অর্থনীতিবিদদের অনেকেই ভালো চোখে দেখছেন না। কারণ
অর্থনীতিবিদদের আশঙ্কা, সরকার
বিদেশ থেকে সার্বভৌম ঋণ নিয়েও যে বিদ্যমান অর্থনীতিকে সামাল দিতে পারবে তার
নিশ্চয়তা নেই। অতীতে উন্নত দেশগুলো এ প্রক্রিয়ায় নিজেদের অর্থনীতি সামাল দিতে
পারেনি। এ ধরনের ঋণ ব্যাহত করবে দেশের মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক অবকাঠামো।
তাছাড়া এ ধরনের ঋণের ফলে দেশে ‘ঋণ
সংকট’ তৈরির
আশঙ্কাও থাকে। সরকার আইএমএফের ঋণ পেতেও মরিয়াভাবে চেষ্টা চালাচ্ছে। এরই মধ্যে ঋণ
পেতে আইএমএফের শর্ত মেনে সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি,
ডলারের
দর ওঠানামায় হস্তক্ষেপ না করা, ব্যাংক
ঋণে সুদ হারের সীমা প্রত্যাহার, জ্বালানি
খাতের ভর্তুকি কমিয়ে আনা, সরকারের
ঋণ কমিয়ে আনাসহ বেশ কিছু পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছে। বাজেটের ভর্তুকির চাপ কমাতে
জ্বালানি তেল ও বিদ্যুতের দাম বাড়িয়েছে, নতুন
আয়কর ও ভ্যাট আইন কার্যকরের উদ্যোগ, মানিলন্ডারিং
ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধে অধ্যাদেশ জারি, সামষ্টিক
অর্থনীতির নীতিতে অগ্রাধিকার ও কাঠামোগত সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে।
No comments:
Post a Comment